প্রশ্ন : গত বছর আমি হজে গেলে আরাফার ময়দানে তীব্র রোদের কারণে কষ্ট হচ্ছিল। এ অবস্থায় আমি একটি বড় ছাতা মাটিতে গেড়ে তার ছায়ায় বসে থাকি এবং কিছুক্ষণ পর সেখানে বসেই ঘুমিয়ে পড়ি। জানতে চাই— ইহরামের অবস্থায় এভাবে ছাতার নিচে বসা বা ঘুমানোর কারণে আমার ওপর কি কোনো দম বা জরিমানা ওয়াজিব হবে?
উল্লেখ্য, ছাতার কাপড়ের কোনো অংশ আমার মাথা বা মুখমণ্ডলকে স্পর্শ করেনি।
উত্তর : বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম।
ইহরামরত অবস্থায় টুপি, পাগড়ি বা কাপড় ইত্যাদি দ্বারা মাথা আবৃত করা নিষেধ। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত হয়েছে, জনৈক ব্যক্তি ইহরামরত অবস্থায় মারা গেলে নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,
اغسلوه بماء وسدر، وكفنوه في ثوبين، ولا تمسوه طيبا، ولا تخمروا رأسه؛ فإن الله يبعثه يوم القيامة ملبيا
অর্থ : পানি ও বরই পাতা দ্বারা তাকে গোসল দাও, দুটি কাপড়ে তাকে কাফন দাও, তার (গায়ে বা কাপড়ে) সুগন্ধি দিয়ো না এবং তার মাথা আবৃত করো না। কারণ আল্লাহ কেয়ামতের দিন তাকে তালবিয়া পাঠরত (ইহরামরত) অবস্থায় ওঠাবেন।
ইমাম সারাখসি রহ. এ হাদিস উল্লেখ করে বলেন,
وفي هذا تنصيص على أن المحرم لا يغطي رأسه
অর্থাৎ এ হাদিস সুস্পষ্টরূপে প্রমাণ করে যে, ইহরামরত ব্যক্তি মাথা ঢাকবে না। [আল-মাবসুত, ৪/৭]
অতএব, ইহরামরত অবস্থায় মাথা আবৃত করা নিষিদ্ধ— এটা সুস্পষ্ট। তবে মাথা থেকে আলাদা কোনো কাপড়, ছাউনি বা ছাতার ছায়ায় বসা নিষিদ্ধ নয়। এটি মাথা আবৃত করার শামিল নয়। বরং সহিহ হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজেই ইহরামরত অবস্থায় রোদের তাপ থেকে বাঁচতে ছায়া গ্রহণ করেছেন। উম্মে হুসাইন রা. বলেন, আমি বিদায় হজে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সঙ্গে হজ করেছি। আমি তখন দেখলাম যে, উসামা রা. ও বেলাল রা. তাঁর সঙ্গে আছেন। তাদের একজন নবীজির উটের লাগাম ধরে আছেন, আর অপরজন ওপরে কাপড় তুলে তাঁকে রোদের তাপ থেকে সুরক্ষা দিচ্ছেন। এরপর নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জামারায় পাথর নিক্ষেপ করলেন। [সহিহ মুসলিম, ১২৯৮]
ফকিহগণ এ হাদিসের ভিত্তিতে বলেন, যতক্ষণ মাথা বা মুখমণ্ডলে কাপড় স্পর্শ না করে— ছায়া গ্রহণ করা জায়েয। সে মতে ইহরামরত অবস্থায় ছাতা হাতে ধরা বা টাঙানো ছাতার ছায়া গ্রহণ করা সবই জায়েয।
অতএব, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ছাতার নিচে বসা বা শোয়া অন্যায় কিছু হয়নি। এর ফলে আপনার ওপর কোনো জরিমানা আবশ্যক হওয়ার প্রশ্নই আসে না।
আরও দ্রষ্টব্য, মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা, ১৪৮৪৫; আস-সুনানুল কুবরা লিল বাইহাকি, ৯১৯৩; তাবয়িনুল হাকায়িক, ২/১৩; মাজমাউল আনহুর, ১/২৬৯
১২২ টি প্রশ্ন আছে
৬০ টি প্রশ্ন আছে
১২১ টি প্রশ্ন আছে
২১৭ টি প্রশ্ন আছে
২৪ টি প্রশ্ন আছে
৭৯ টি প্রশ্ন আছে
৩৩ টি প্রশ্ন আছে
৫৮ টি প্রশ্ন আছে
৬৩ টি প্রশ্ন আছে
১৪১ টি প্রশ্ন আছে
২১৯ টি প্রশ্ন আছে
৮৪ টি প্রশ্ন আছে