প্রশ্ন : মসজিদের পাশেই আমার বাড়ি। মসজিদটি একতলা-বিশিষ্ট। আর আমি তিনতলা-বিশিষ্ট বাড়ি নির্মাণ করতে চাচ্ছি। এলাকাবাসী বলছে, মসজিদ নিচে থাকলে পুরো এলাকাবাসী গুনাহগার হবে। তাই তারা আমাকে বাড়ি নির্মাণ করতে দিচ্ছে না। যদি করি, তাহলে আগে মসজিদ দোতলা করে দিতে হবে। এ ব্যাপারে শরিয়ত কী বলে?
উত্তর : মসজিদ মহান আল্লাহর ঘর ও ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শন। তাই মসজিদের সম্মান রক্ষা করা আবশ্যক। আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَمَنۡ یُّعَظِّمۡ شَعَآئِرَ اللّٰہِ فَاِنَّہَا مِنۡ تَقۡوَی الۡقُلُوۡبِ
অর্থ : কেউ আল্লাহর নিদর্শনাবলির সম্মান করলে তা অন্তরের তাকওয়ার কারণে হয়ে থাকে। [সুরা হাজ, ৩২]
এ ছাড়াও হাদিসে মসজিদের সম্মান রক্ষার প্রতি অনেক গুরুত্ব প্রদান করা হয়েছে। সম্মান রক্ষার অংশ হিসেবেই মসজিদকে পেশাব ও ময়লা-আবর্জনা থেকে পবিত্র রাখতে বলা হয়েছে, মসজিদে ক্রয়বিক্রয় ও আওয়াজ উঁচু করতে নিষেধ করা হয়েছে, দুর্গন্ধযুক্ত খাবার খেয়ে মসজিদে আসতে বারণ করা হয়েছে ইত্যাদি।
অতএব, মসজিদের সম্মান রক্ষা করা আবশ্যক। এর প্রতি কোনো ধরনের অসম্মানজনক আচরণ করা জায়েয নয়।
তবে মসজিদের পাশে তার চেয়ে উঁচু ভবন নির্মাণ করা সম্মান-পরিপন্থি বিষয় নয়। মাসজিদুল হারামের আশেপাশে তার চেয়ে উঁচু উঁচু ভবন রয়েছে। কিন্তু এটাকে আলেমগণ মাসজিদুল হারামের সম্মান-পরিপন্থি মনে করেন না।
এ ছাড়া মসজিদের পাশে তার চেয়ে উঁচু ভবন নির্মাণের ব্যাপারে কুরআন-হাদিসে কোনো নিষেধাজ্ঞাও বর্ণিত হয়নি। তাই এটা নাজায়েয হওয়ার কারণ নেই।
অতএব, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার জন্য তিন তলা বিশিষ্ট বাড়ি নির্মাণ করতে কোনো সমস্যা নেই। মসজিদের পাশে তার চেয়ে উঁচু বাড়ি নির্মাণ করলে এলাকাবাসী গুনাহগার হবে— মর্মে কথিত বক্তব্য সঠিক নয়। একইভাবে তিনতলা-বিশিষ্ট বাড়ি নির্মাণ করার আগে মসজিদকে দ্বি-তলবিশিষ্ট করে দেওয়ার দাবিও শরিয়তসম্মত নয়। কারণ, অন্যায়ভাবে কারও ওপর কোনো কিছু চাপিয়ে দেওয়া জুলুমের শামিল, যা হারাম ও কবিরা গুনাহ। আল্লাহ তাআলা হাদিসে কুদসিতে বলেন,
يَا عِبَادِيْ إِنِّيْ حَرَّمْتُ الظُّلْمَ عَلَى نَفْسِيْ، وَجَعَلْتُهُ بَيْنَكُمْ مُحَرَّمًا فَلَا تَظَالَمُوْا
অর্থ : হে আমার বান্দাগণ, আমি নিজের ওপর জুলুম হারাম করে নিয়েছি এবং তোমাদের জন্য জুলুম হারাম করেছি। অতএব, তোমরা এক অপরের প্রতি জুলুম করো না। [সহিহ মুসলিম, ২৫৭৭]
মোটকথা, মসজিদের পাশে তার চেয়ে উঁচু ভবন নির্মাণ করা যাবে। এতে কোনো সমস্যা নেই।
আরও দ্রষ্টব্য, আল-মাউসুআতুল ফিকহিয়্যাতুল কুয়েতিয়্যা, ৬/১১০; ফাতাওয়াল লাজনাতিদ দায়িমা, ৫/২৮৯
১২২ টি প্রশ্ন আছে
৬০ টি প্রশ্ন আছে
১২১ টি প্রশ্ন আছে
২১২ টি প্রশ্ন আছে
২৪ টি প্রশ্ন আছে
৭৯ টি প্রশ্ন আছে
৩০ টি প্রশ্ন আছে
৫৮ টি প্রশ্ন আছে
৫৬ টি প্রশ্ন আছে
১৪১ টি প্রশ্ন আছে
২১২ টি প্রশ্ন আছে
৮২ টি প্রশ্ন আছে