প্রশ্ন : সম্প্রতি জনৈক ব্যক্তি তার স্ত্রী সম্পর্কে বলেছেন, আমি মায়ের মতো একটা বউ পেয়েছি। এটা দ্বারা তিনি বোঝাতে চেয়েছেন, তার স্ত্রী মায়ের মতো যত্ন-আত্তি করে। এভাবে বললে বৈবাহিক সম্পর্কের কি কোনো ক্ষতি হবে?
উত্তর : নিজের ওপর হারাম করে নেওয়ার নিয়তে স্ত্রীকে মায়ের সঙ্গে তুলনা করলে স্ত্রী হারাম হয়ে যায়, শরিয়তের পরিভাষায় যাকে জিহার বলা হয়। জিহারের ফলে স্ত্রী তালাক হয় না, স্থায়ীভাবে হারামও হয় না, বরং কাফফারা আদায়ের আগ পর্যন্ত স্ত্রী স্বামীর জন্য হারাম গণ্য হয়। আর কাফফারা হলো যথাক্রমে— একজন দাস মুক্ত করা, এটা সম্ভব না হলে অনবরত দুইমাস সিয়াম পালন করা, এটাও সম্ভব না হলে ষাটজন মিসকিনকে খাদ্য দান করা। [বিস্তারিত জানতে সুরা মুজাদালা, আয়াত ১-৪ দ্রষ্টব্য]
তবে কেউ যদি হারাম করে নেওয়ার নিয়তে নয়, বরং সদাচার বা যত্ন-আত্তির বিষয়ে স্ত্রীকে মায়ের সঙ্গে তুলনা করে, তবে তা জিহার হিসেবে গণ্য হয় না। এর ফলে স্বামী-স্ত্রীর বৈবাহিক সম্পর্কেরও কোনো ক্ষতি হয় না। প্রখ্যাত হানাফি ইমাম কাজিখান রহ. বলেন,
ولو قال أنت علي كأمي أو مثل أمي ونوى به البر والكرامة لا يلزمه شيئ. وإن نوى الظهار كان ظهارا
অর্থাৎ যদি স্বামী স্ত্রীকে বলে, তুমি আমার জন্য আমার মায়ের মতো অথবা তুমি আমার মায়ের মতো, তবে এ কথা দ্বারা সদাচার ও মর্যাদায় মায়ের সঙ্গে তুলনা করা উদ্দেশ্য হয়ে থাকলে (তা জিহার হিসেবে গণ্য হবে না এবং) তার ওপর কোনো কিছু আবশ্যক হবে না। তবে এ কথা দ্বারা জিহার উদ্দেশ্য হয়ে থাকলে তা জিহার বলে গণ্য হবে। [আল-ফাতাওয়াল খানিয়্যা, ১/৪৯১]
আর প্রশ্নোক্ত ব্যক্তি যেহেতু যত্ন-আত্তির ক্ষেত্রে স্ত্রীকে মায়ের সঙ্গে তুলনা করেছেন, স্ত্রীকে নিজের ওপর হারাম করে নেওয়ার ইচ্ছা করেননি, তাই উক্ত তুলনা জিহার বিবেচিত হবে না এবং তাদের বৈবাহিক সম্পর্কেরও কোনো ক্ষতি হবে না।
তথাপি এজাতীয় শব্দের যেহেতু জিহারের সঙ্গে এক ধরনের সাদৃশ্য রয়েছে, তাই এজাতীয় শব্দ ব্যবহার থেকে বিরত থাকা উচিত।
আরও দ্রষ্টব্য, কিতাবুল উম্ম, ৫/২৯৬; মুলতাকাল আবহুর, পৃ. ১১৮; মাজমাউল আনহুর, ১/৪৪৯; আল-ফাতাওয়াল হিন্দিয়্যা, ১/৫০৭; ফাতাওয়াল লাজনাতিদ দায়িমা, ২০/৩১৫
১২২ টি প্রশ্ন আছে
৬০ টি প্রশ্ন আছে
১২১ টি প্রশ্ন আছে
২১১ টি প্রশ্ন আছে
২৩ টি প্রশ্ন আছে
৭৯ টি প্রশ্ন আছে
২৯ টি প্রশ্ন আছে
৫৭ টি প্রশ্ন আছে
৫৪ টি প্রশ্ন আছে
১৩৭ টি প্রশ্ন আছে
২০৩ টি প্রশ্ন আছে
৮১ টি প্রশ্ন আছে