logo

হোলি বা ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের উৎসবে অংশগ্রহণ করার বিধান

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
ঈমান ও আকায়েদআখলাক ও ইসলামী শিষ্টাচার
২ মাস আগে
১৩৭

প্রশ্ন : জনাব, আমাদের ইউনিভার্সিটিতে প্রতি বছর ঢাকঢোল পিটিয়ে হোলি উৎসব পালন করা হয়। এতে হিন্দুদের সাথে সাথে অনেক মুসলিম ছাত্রছাত্রীও অংশ নেয়। আমার প্রশ্ন হলো মুসলিমদের জন্য এ ধরনের উৎসবে অংশ নেওয়া জায়েজ হবে কি?

উত্তর : ইসলামে ধর্মীয় স্বাতন্ত্র্য রক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম। কোনো মুসলিমের জন্য ধর্মীয় স্বাতন্ত্র্য বিসর্জন দেওয়া বৈধ নয়। এ ধর্মীয় স্বাতন্ত্র্য রক্ষার স্বার্থে বিজাতীয়দের ধর্মীয় উৎসবে অংশগ্রহণ তো দূরের কথা, তাদের সাদৃশ্য ধারণ করতেও নিষেধ করা হয়েছে। নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন,

مَنْ تَشَبَّهَ بِقَوْمٍ فَهُوَ مِنْهُمْ

অর্থ : যে কোনো জাতির সাদৃশ্য ধারণ করবে, সে তাদের-ই অন্তর্ভুক্ত গণ্য হবে।  [সুনানু আবি দাউদ : ৪০৩১]

 

এ ছাড়া ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় উৎসবের সঙ্গে তাদের ভ্রান্ত বিশ্বাস জড়িত থাকে। তাই ভিন্ন ধর্মীয় উৎসবে অংশগ্রহণ করা সংশ্লিষ্ট ধর্মের ভ্রান্ত বিশ্বাসের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করার-ই নামান্তর, যা কেবল অবৈধ-ই নয়, বরং কুফরি।

এ সকল কারণে ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের উৎসবের দিনে মুসলিমদেরকে তাদের থেকে দূরে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। উমর ইবনুল খাত্তাব রা. বলেন,

لَا تَدْخُلُوْا عَلَى الْمُشْرِكِيْنَ فِيْ كَنَائِسِهِمْ يَوْمَ عِيْدِهِمْ فَإِنَّ السَّخْطَةَ تَنْزِلُ عَلَيْهِمْ

 

অর্থ : তোমরা মুশরিকদের উৎসবের দিন গীর্জায় তাদের কাছে যেও না। কারণ, তাদের ওপর আল্লাহর অসন্তোষ নাজিল হয়।

 [আস-সুনানুল কুবরা লিল বাইহাকি, ১৮৮৬১]

সাহাবি আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস রা. বলেন, যে ব্যক্তি কাফিরদের ভূখণ্ডে বসবাস করবে, তাদের ধর্মীয় উৎসব নওরোজ ও মিহিরজান পালন করে তাদের সাদৃশ্য গ্রহণ করবে এবং ওই অবস্থায় মারা যাবে, সে কেয়ামতের দিন তাদের সঙ্গেই উঠবে।

[আস-সুনানুল কুবরা লিল বাইহাকি, ১৮৮৬৩]

সুতরাং মুসলিমদের জন্য ভিন্ন ধর্মীয় কোনো উৎসবে অংশগ্রহণ করা বৈধ নয়। আর হোলি হিন্দু ধর্মীয় একটি উৎসব। হিন্দুরা নিজেদের ধর্মচর্চার অংশ হিসেবেই এ উৎসব পালন করে। এ উৎসবের সঙ্গে তাদের ধর্মবিশ্বাস জড়িত। অধিকন্তু এতে রয়েছে নারীপুরুষের অবাধ মেলামেশা, অশ্লীলতা, যৌন হয়রানিমূলক কর্মকাণ্ড-সহ বহু শরিয়ত-নিষিদ্ধ অনুষঙ্গ। এ জন্য মুসলিম ছাত্রছাত্রীদের জন্য উক্ত উৎসবে অংশগ্রহণ করা জায়েজ নয়; বরং এতে অংশগ্রহণ করলে কুফরির আশঙ্কা রয়েছে।

অতএব, প্রত্যেক মুসলিমের এ বিষয়ে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকা অপরিহার্য।

সূত্র : সুনানুত তিরমিযি, ২৬৯৫; শুআবুল ঈমান, ৮৯৪০; ইকতিযাউস সিরাতিল মুস্তাকিম, ১/৫২৮; মাজমাউল আনহুর, ১/৬৯৮; আল-বাহরুর রায়িক, ৫/১৩৩; আল-ফাতাওয়াল কুবরা, ২/৪৮৮

 

একই প্রশ্ন আপনার বন্ধু-প্রিয়জনদের থাকতে পারে,
আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে উত্তরটি শেয়ার করে আপনিও সদকায়ে জারিয়ায় অংশ নিন

বিভাগসমূহ

ঈমান ও আকায়েদ

১২০ টি প্রশ্ন আছে

কুরআনুল কারীম

৬০ টি প্রশ্ন আছে

হাদীস ও সুন্নাহ

১২১ টি প্রশ্ন আছে

পবিত্রতা ও সালাত

২০২ টি প্রশ্ন আছে

যাকাত ও সাদাকাহ

২১ টি প্রশ্ন আছে

সিয়াম/রামাদান

৭৯ টি প্রশ্ন আছে

হাজ্জ ও উমরাহ

২৭ টি প্রশ্ন আছে

কুরবানী ও আকীকা

৫৬ টি প্রশ্ন আছে

ব্যবসা-বাণিজ্য ও লেনদেন

৪৭ টি প্রশ্ন আছে

আখলাক ও ইসলামী শিষ্টাচার

১২৮ টি প্রশ্ন আছে

হালাল-হারাম

১৭৭ টি প্রশ্ন আছে

বিবাহ ও তালাক

৭৬ টি প্রশ্ন আছে

ফেসবুক পাতা

নিয়মিত ইসলামিক তথ্য পেতে আমাদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে সংযুক্ত থাকুন